
অনলাইন ডেস্ক : ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার আচারগাঁও ইউনিয়নের টঙ্গীরচর এলাকার ষাটোর্ধ্ব ইনতাজ আলী ব্যাপারী। গাছ কেটে নির্বাহ করেন জীবিকা। এখন বয়স হওয়ায় এখন আর আগের মতো কাজ করতে পারেন না। গত ৫ বছর ধরে বেশ কিছু লোকের কাছে তার পাওনা রয়েছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। পাওনা টাকা আদায়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে অনুনয়-বিনয় করেও টাকা আদায় করতে পারছেন না তিনি। এমনকি থানায় অভিযোগ করেও আদায় করতে পারেননি পাওনা টাকা।
দেনাদারদের কাছ থেকে পাওনা টাকা কোনোভাবেই উদ্ধার করতে না পেরে হতদরিদ্র কাঠুরে ইনতাজ ব্যাপারী স্থানীয় বাজারে দেনাদারদের তালিকা সম্বলিত ব্যানার টাঙিয়ে দিয়েছেন।
লিখে দিয়েছেন দেনাদারের নাম ও পাশে টাকার পরিমাণ। এ ধরনের অভিনব পদ্ধতি অবলম্বন করায় সাধারণ লোকজন এটাকে এক ধরনের প্রতিবাদ বলছেন। আবার কেউ কেউ বিষয়টি নিয়ে শত্রুতার আশঙ্কাও করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইনতাজ আলী ব্যাপারীর বয়স বেশি হওয়াতে এখন আর আগের মতো কাজে যেতে পারেন না। গত পাঁচ বছর ধরে ছয়জনের কাছে ২৫ হাজার টাকা পাওনা থাকলেও তা আদায় করতে পারছেন না। বিষয়টি নান্দাইল মডেল থানায় জানালেও ফয়সালা হয়নি। রাগে-ক্ষোভে ডিজিটাল ৪ বাই ৫ ইঞ্চি ব্যানারে ছয়জনের নাম ও টাকার পরিমাণ লিখে বিভিন্ন জায়গায় টাঙিয়ে দেন।
ব্যানারটির ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে নেটিজেনদের কেউ কেউ বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে নিলেও অনেকেই নেতিবাচক বলছেন।
ব্যানারে লেখা ইনতাজ আলী পাওনাদার দিলু ব্যাপারী ৬ হাজার টাকা, হুমায়ুন ব্যাপারী ২ হাজার ৬০০, সুজন ব্যাপারী ৭৫০, নজরুল ব্যাপারী ২ হাজার ৪০০, বারেক গাছের ব্যাপারী ১৩ হাজার ও রতন গাছ কাটে ২০০ টাকা।’ ব্যানারের নিচে লেখা রয়েছে ‘থানা থেকে অর্ডার, এই বিষয়টা এলাকাবাসীকে জানানোর জন্য। যদি এই টাকা না দেন তাহলে থানায় মামলা হবে।
এ বিষয়ে কথা বলতে দেনাদারদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে সাড়া না পাওয়ায় তাঁদের বক্তব্য জানা যায়নি। জানতে চাইলে ইনতাজ আলী ব্যাপারী গনমাধ্যমকে বলেন, কত বাবা ভাই ডাইক্যা কইছি, তাও টেহা (টাকা) পাই না। মাইনসেরে জানাতে ও হেরারে (দেনাদার) শরম দিতে এই কাম করছি। তাও যদি টেহা না দেয়, তাইলে মাইক লইয়া বাইর হইয়াম।
নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার জালাল উদ্দিন মাহমুদ গনমাধ্যমকে বলেন, এমন প্রচারণা করতে থানা থেকে বলা হয়নি। ইনতাজ আলী ব্যাপারী থানায় এসে অভিযোগ দিলে আমরা ব্যবস্থা নেব।