বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, তারেক রহমানই আওয়ামী ফ্যাসিবাদবিরোধী গণঅভ্যুত্থানের সফল রূপকার। সেই অভ্যুত্থানের মুখে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা জনতার তাড়া খেয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে পালিয়ে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন।
শুক্রবার (২৭ জুন) রাতে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট পৌর শহরের পাগলপাড়া এলাকায় ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির আয়োজিত কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানে তারেক রহমানের অবদান অস্বীকার করার চেষ্টা মানেই প্রকৃত সত্যকে আড়াল করা। আওয়ামী সরকারের চরম ফ্যাসিবাদী আচরণের কারণে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বারবার বাধার মুখে পড়ছিল। সে সময় তারেক রহমান তার বিচক্ষণতা, রাজনৈতিক দূরদৃষ্টি ও নেতৃত্বগুণ দিয়ে বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলকে রাজপথে সংগঠিত করে এই আন্দোলনে সম্পৃক্ত করেন এবং এটিকে গণঅভ্যুত্থানে রূপ দেওয়ার পথনির্দেশনা দেন। আন্দোলনের প্রতিটি মুহূর্ত তিনি নিবিড়ভাবে তত্ত্বাবধান করেছেন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়ে গেছেন।
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিস্টদের ছোড়া প্রতিটি গুলির শব্দে তারেক রহমানের হৃদয় কেঁপে উঠেছে, কিন্তু তিনি পিছু হটেননি। বরং সেই গুলির রাজনৈতিক জবাব দিতে নেতাকর্মীদের আরও দৃঢ়তা ও সাহসে উজ্জীবিত করেছেন। আজ যখন গণঅভ্যুত্থানের ঐক্য সুদৃঢ় হয়েছে, তখন কিছু মহল এটিকে দুর্বল করতে অপচেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু যে কোনো মূল্যে এই ঐক্য অক্ষুণ্ন রাখতে হবে এবং প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক সংস্কার শেষে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে।
সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, দ্রুত নির্বাচন এখন জনগণের স্পষ্ট চাহিদা। লন্ডনে ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে রোজার আগেই নির্বাচনের যে সময়সীমা নির্ধারিত হয়েছে, তা জানতে পেরে জনগণ আশাবাদী ও আনন্দিত। প্রধান উপদেষ্টা ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারের মধ্যে অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক বৈঠকের খবরে আমরা সন্তোষ প্রকাশ করছি। আশা করছি, প্রধান উপদেষ্টা সেই বৈঠকে নির্বাচন কমিশনকে আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিতে আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, সাংগঠনিক পুনর্গঠনের পাশাপাশি প্রতিটি ওয়ার্ডের ঘরে ঘরে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সালাম পৌঁছে দিন এবং এখন থেকেই ধানের শীষের প্রচারণা শুরু করুন। আগামী দিনের ধানের শীষের সরকার নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকল নাগরিকের জন্য একটি উন্নত, মানবিক জীবন নিশ্চিত করতে কাজ করবে।
তিনি আরও জানান, বিএনপি সরকার গঠন করতে পারলে তারেক রহমানের নেতৃত্বে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে—সবার জন্য বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা, কৃষকদের একটি মৌসুমি ফসলের উৎপাদন খরচ প্রদান, প্রতিটি পরিবারে একজন নারী সদস্যকে ‘নেম ফ্যামিলি কার্ড’-এর মাধ্যমে ঘরসংসারের খরচে সহায়তা দেওয়া এবং বেকার যুবকদের জন্য বেকার ভাতা চালু করা। এসব প্রতিশ্রুতি তুলে ধরে তিনি জনগণের কাছে ধানের শীষের পক্ষে ভোট চান।
হালুয়াঘাট পৌর বিএনপির আহ্বায়ক হানিফ মোহাম্মদ শাকের উল্লাহর সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব আবদুল আজিজ খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত কর্মী সমাবেশে ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোতাহার হোসেন তালুকদার, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আসলাম মিয়া বাবুল, সদস্যসচিব আবু হাসনাত বদরুল কবীর, পৌর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর আলম বিপ্লব, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আমজাদ আলী, আলী আশরাফ, কাজী ফরিদ আহমেদ পলাশ, পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সুলতান মহিউদ্দিন, মনিরুজ্জামান স্বাধীন, শামসুল আলম সামস, তাজিকুল ইসলাম, অনোয়ার হোসেন, ময়মনসিংহ উত্তর জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদিকা হোসনে আর নিলু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক রুহুল আমিন খান, বিভাগীয় শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল গনি, জেল যুব দলের সদস্য আবদুল মালেক সোহান, জেলা জাসাস এর সভাপতি শফিকুল ইসলাম, উপজেলা তাঁতী দলের আহ্বায়ক আকিকুল ইসলাম, পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব তাজবির হোসেন অন্তর বক্তব্য রাখেন।