দুই শিশুকে অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবি, একজনের লাশ মিললো পুকুরে

2

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে দুই শিশু নিখোঁজের পরদিন সিফাত হাসান (১১) নামের এক শিশুর মরদেহ পুকুর থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। শিশুটি নিখোঁজের পর মুক্তিপণ দাবি করেছিল একটি চক্র।

শনিবার (১২ জুলাই) সকালে উপজেলার পাগলা থানার অধীন পাঁচবাগ ইউনিয়নের চরশাঁখচূড়া গ্রামের পুকুর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

সিফাত হাসান একই গ্রামের সৌদি প্রবাসী নুর ইসলামের ছেলে। সে স্থানীয় চরশাঁখচূড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

তবে এখনো নিখোঁজ রয়েছে একই ইউনিয়নের দিঘিরপাড় গ্রামের সৌদি প্রবাসী আল-আমিনের ছেলে আইমান সাদাব (৫)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (১১ জুলাই) দুপুরে সিফাত বাড়ির সামনে থেকে নিখোঁজ হয়। একই সময় দিঘিরপাড় গ্রামের আইমান সাদাব বাড়ির পাশে দোকানে হালখাতা অনুষ্ঠানে মাইক বাজতে থাকা শব্দ শুনে দোকানের সামনে যায়। এরপর থেকে নিখোঁজ হয় সাদাব। দুই শিশুকে তাদের পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান না পেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

নিখোঁজের পর রাতে একটি চক্র সৌদি প্রবাসী নুরুল ইসলামের ইমো নম্বরে ফোন করে। এসময় তার ছেলে সিফাতকে মুক্তির বিনিময়ে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন তারা। কিন্তু নুরুল ইসলাম তার ভাগনে জিসানের নম্বর দিয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। পরে ওই চক্রটি জিসানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে বিকাশে দুই হাজার টাকা পাঠানো হয়। এসময় অন্য একটি নম্বরে বাকি টাকা পাঠাতে বলে চক্রটি। কিন্তু জিসান বাকি টাকা পাঠায়নি। এরইমধ্যে সকালে পুকুরের পানিতে সিফাতের মরদেহ ভাসতে দেখেন স্থানীয়রা।

পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। কিন্তু এখনো নিখোঁজ রয়েছে শিশু আইমান সাদাব।

সিফাতের মা কবিতা বেগম বলেন, ‘কথামতো পুরো টাকা দিতে না পারলেও দুই হাজার টাকা দেওয়া হয়েছিল। এরপরও মানুষ নামের পশুর দল আমার সন্তানকে হত্যা করেছে। আমার সন্তান হত্যার উপযুক্ত বিচার চাই।’

নিখোঁজ শিশু সাদাবের নানা সুলতান মিয়া বলেন, ‘বাড়ির পাশে দোকানের সামনে থেকে আমার নাতিকে অপহরণ করা হয়েছে। অপরাধীরা আমার মেয়ের কাছে ফোন করে ৩০ হাজার টাকা দাবি করেছে। আশপাশের পুকুর-ডোবা ও স্বজনদের বাড়িঘরে তল্লাশি চালিয়েছি। কিন্তু তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। আমরা নিখোঁজ সাদাবের সন্ধান চাই।’

এ বিষয়ে পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আলম বলেন, একটি প্রতারক চক্র এ ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে। ঘটনাটির তদন্ত চলছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here