ময়মনসিংহে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

14

ময়মনসিংহ  প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের শিশু বলৎকারকারী মাদ্রাসা শিক্ষককের স্থায়ী বহিষ্কার, শিক্ষকদের সাথে মাদরাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতির অসৌজন্যমূলক আচারণের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা, শিক্ষকদের বেআইনী ভাবে বহিস্কারের পায়তারা বন্ধের দাবীতে মাদরাসা শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে।

শনিবার (২৬ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত নগরীর কেবি ইসমাইল রোডে (পাটগুদাম টু কাচারি সড়ক) জামিয়া ফয়জুর রহমান (রহ:) বড় মসজিদ, মাদরাসার শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। এতে সড়কের দুই পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ ঘটনায় নগরীবাসীর চরম ভোগান্তি ও দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়।

জানা যায়, ময়মনসিংহের ঐতিহ্যবাহী জামিয়া ফয়জুর রহমান (রহ:) বড় মসজিদ, মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা আজিজুল হকের বিরুদ্ধে শিশু বলৎকার এবং অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ছিল, যার কারণে তাকে বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু মাদরাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি হিসেবে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মুফিদুল আলম একটি তদন্তের পর সেই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নেন। একই সঙ্গে, তিনি মাদরাসার অন্য দুজন শিক্ষক মুফতি মোফাজ্জল হক ও মুফতি সারোয়ার হোসেনকে পদ থেকে সরিয়ে দেন। ডিসির এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শনিবার সকালে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করে।

সূত্র জানায়, শিশু বলৎকার ও মাদারাসার শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে বিগত কিছুদিন আগে মাদরাসা থেকে বহিষ্কার হন হুজুর মাওলানা আজিজুল হক। কিন্তু মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি পদে বর্তমান দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মুফিদুল আলম অভিযোগ তদন্তপূর্বক মাওলানা আজিজুল হকের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করেন।

একই সঙ্গে মুফতি মোফাজ্জল হককে শিক্ষক পদ থেকে বহিষ্কার করেন এবং মুফতি সারোয়ার হোসেনকে মাদরাসার উপাধ্যক্ষ পদ থেকে অপসারণ ও পরিচালনা কমিটি থেকেও সরিয়ে দেন।

এ খবরে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা শনিবার সকাল থেকে মাদরাসা প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করে ডিসির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানায়। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সাড়া না দেওয়ায় সকাল ১০টায় শিক্ষার্থীরা মাদরাসা সংলগ্ন কেবি ইসমাইল রোডে (পাটগুদাম টু কাচারি সড়ক) অবস্থান নিয়ে ডিসির বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়।

আন্দোলনকারী মাদরাসা শিক্ষার্থী তাওহীদুল ইসলাম ও নাজমুস সাকিব জানান, একটি মহল শিশু নির্যাতনকারী বহিষ্কৃত শিক্ষক আজিজুল হকের পক্ষে অবস্থান নিয়ে ডিসিকে নানা ভাবে প্রভাবিত করে শিশু নির্যাতনকারী বহিষ্কৃত শিক্ষকের পক্ষ নিয়ে অন্য শিক্ষক মুফতি মোফাজ্জল হককে অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করেছে। একই সঙ্গে আমাদের উপাধক্ষ্য মুফতি সারোয়ার হোসেনকে পদ এবং মাদরাসার পরিচালনা কমিটি থেকেও ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপসারণ করেছে। এছাড়াও ডিসি আমাদের হুজুরদের শাসিয়ে অপমান অপদস্থ করেছেন। অবিলম্বে ডিসি তার এসব সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসলে আমরা আরও কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।

এদিকে সড়ক অবরোধের সত্যতা নিশ্চিত করে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শিবিরুল ইসলাম জানান, বিষয়টি নিয়ে মাদরাসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আশা করছি খুব দ্রুত সৃষ্ট সমস্যার সামাধান হবে।

ঘটনার বিষয়ে জানতে মাদরাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মুফিদুল আলম ও মাদাসার অধ্যক্ষের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here